জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর দশম শ্রেণি বাংলা | Gyancokkhu Golper Question Answer Class 10 Bengali

জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর
জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন ও উত্তর

জ্ঞানচক্ষু গল্পের ৫ নম্বরের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর


১। ছোটোগল্পের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করে 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি শ্রেণিগত বিচারে একটি ছোটোগল্প হয়ে উঠতে পেরেছে কি না, তা বিচার করো।

ছোটোগল্প বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ শিল্পরূপ। ছোটোগল্পের বিশেষ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল-

ছোটোগল্পের বৈশিষ্ট্য : এক, ছোটোগল্প আকৃতিতে ছোটো হবে। ছোটো অবয়বের মধ্যে কাহিনি গড়ে উঠবে। তাই বলা যায়- A short story is a story that can be finished in a single sitting. দুই, ছোটোগল্পে ঘটনার গতির একমুখিতা থাকবে। তিন, চরিত্র থাকবে সংখ্যায় কম। চার, কোনো তত্ত্ব ও উপদেশ থাকবে না। পাঁচ, থাকবে আরম্ভের তির্যকতা ও সমাপ্তির চমৎকারিত্ব। ছয়, সর্বোপরি পাঠকমন এক অতৃপ্তিতে পূর্ণ থাকবে, যাকে বলা হয় 'শেষ হয়ে হইল না শেষ'। এককথায় জীবনের সারাংশের মধ্যে সামগ্রিকতার প্রকাশ, অর্থাৎ 'বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন' কিংবা 'গোষ্পদে বিম্বিত আকাশ' ছোটোগল্পের বৈশিষ্ট্য।

কাহিনি বর্ণনা : লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটির কাহিনিকায়া বিশ্লেষণ করলে আমরা উপরের সবকটি বৈশিষ্ট্য উপলব্ধি করতে পারি। গল্পটি আকৃতিতে খুবই ছোটো, মাত্র চার পৃষ্ঠার একটি নিটোল কাহিনি; ঘটনার গতিও একমুখী। তপনের গল্প লেখাকে কেন্দ্র করে দুটি মাত্র প্রধান চরিত্র এবং একটি গৌণ চরিত্রকেই অবলম্বন করে ঘটনা পরিণতির দিকে এগিয়ে গিয়েছে। বিশেষ কোনো তত্ত্বকথা এবং উপদেশাবলি কাহিনি থেকে পাওয়া যায় না। 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে শুরু এবং শেষের মধ্যে বিশেষ একটা আকস্মিকতা লক্ষণীয়। গল্পটি শুরু হয়েছে হঠাৎ বালক তপনের নবভাবনার মধ্য দিয়ে এবং গল্পটি শেষও হয়েছে তপনের মানস উন্মোচনের এক আকস্মিক অনুভূতির মধ্য দিয়ে। পাঠকের জন্য একটা বিশেষ চমক অপেক্ষা করে থাকে যখন গল্পের শেষদিকে তপন জানতে পারে যে, ছোটোমেসো তার লেখা গল্পটা আগাগোড়া 'কারেকশান' করে দিয়েছেন বলেই গল্পটি ছাপা হয়েছে। ফলে শেষপর্যন্ত কিশোর লেখক তপনের হৃদয়ে একটা অতৃপ্তি থেকে যায়, তার নিজের হাতে লেখা গল্প কবে কীভাবে ছাপা হবে তা নিয়ে।

তাই সবদিক বিচার করে বলা যায়, আশাপূর্ণা দেবীর 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি একটি আদর্শ ছোটোগল্প হয়ে উঠতে পেরেছে।

২। জ্ঞানচক্ষু' গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের প্রধান চরিত্র তপন নামের এক কিশোর। তার জীবনের স্বপ্ন, স্বপ্নপূরণের আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্নভঙ্গের বেদনা ইত্যাদি প্রসঙ্গে কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যে চরিত্রটি গল্পে জীবন্ত হয়ে ওঠে।

কল্পনাপ্রবণতা : তপন কল্পনাপ্রবণ। তার কৈশোর মনের রঙিন কল্পনায় সে বিশ্বাস করে লেখক কোনো সাধারণ মানুষ নয়; এমনকি লেখক আকাশ থেকে পড়া কোনো অদ্ভুত জীব।

কৌতূহলী : তপন কৌতূহলী। তাই তার সাহিত্য-অনুরাগী মন এবং লেখক হওয়ার স্বপ্নাকাঙ্ক্ষা ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে লেখক মেসোর সঙ্গে আলাপে কৌতূহলপ্রবণ হয়ে নতুন মেসোর দাড়ি কামানো, সিগারেট খাওয়া, গল্প করা ইত্যাদি দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যাবলি গভীরভাবে লক্ষ করে।

সাহিত্যপ্রেমিকতপন সাহিত্যপ্রেমিক। শৈশব থেকেই সে গল্প পড়ে এবং গল্প লেখে। লেখক হওয়ার স্বপ্নে তার দিন কেটে যায়।

অন্তর্মুখী : তপন অন্তর্মুখী। তাই তপন সবার অলক্ষ্যে সৃজনশীল হয়ে ওঠে। তপনের সমবয়সি সকলে খুনজখম অ্যাকসিডেন্ট, অনাহার ইত্যাদি নিয়ে গল্প লিখলেও সে নিজের ভরতি হওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে গল্প লেখে।

সংবেদনশীল : তপন সংবেদনশীল বলেই সে যখন দেখে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় প্রকাশিত 'প্রথমদিন' নামক তার লেখা গল্পটি নতুন মেসোর 'কারেকশান' করা গল্পের পরিবর্তে নতুন মেসোর নিজস্ব ভঙ্গিতে লেখা সম্পূর্ণ নতুন একটি গল্প, তখন সেই ঘটনার অভিঘাতে সে অপমানিত, দুঃখিত ও স্তম্ভিত হয়ে যায়।

আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্নতপনের আত্মমর্যাদাবোধ প্রবল। তাই গল্প ছাপার প্রসঙ্গে সে অপমানিত হলে দৃঢ়ভাবে সংকল্প নেয় ভবিষ্যতে নিজের লেখা ছাপাতে হলে সে নিজেই যাবে ছাপাখানায়। কারোর সাহায্যে আর গল্প ছাপাবে না।

৩। 'জ্ঞানচক্ষু' গল্প অবলম্বনে তপনের মেসোমশাই-এর চরিত্র আলোচনা করো।

বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর গল্পে সমাজের পরিচিত মানুষগুলি তাদের স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। তাঁর 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে অন্যান্য চরিত্রের সঙ্গে তপনের মেসোমশাই চরিত্রটিও তেমনই চেনা জীবনের অতি চেনা এক মানুষ।

অপ্রিয় সত্যভাষণে অনভ্যস্ততপনের সদ্যবিবাহিতা ছোটোমাসি তপনের লেখা একটি গল্প লেখক মেসোর কাছে নিয়ে গেলে পেশায় প্রফেসার ছোটোমেসো সেই গল্প পড়ে প্রশংসা করে জানান, সামান্য 'কারেকশান' করে দিলে গল্পটি ছাপানো যায়। নতুন মেসোর এই আচরণে স্পষ্ট হয় যে, শ্বশুরবাড়িতে নতুন জামাই হিসেবে এসে তিনি তপনকে অপ্রিয় সত্য বলে অখুশি করতে চাননি। বরং প্রশংসার মাধ্যমে তিনি সকলের মন জিতে নিতে চেয়েছেন।

সংবেদনশীল ব্যক্তিত্বের আত্মপ্রকাশ : সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীর অনুরোধে নতুন মেসো প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি তপনের লেখা গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। এই ঘটনায় প্রমাণিত হয় নিজের স্ত্রীর মর্যাদার দিকে যেমন তার সতর্ক দৃষ্টি আছে, তেমনি তপনের প্রতি মমতায় নতুন মেসোর এক সংবেদনশীল ব্যক্তিত্বের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

প্রতিশ্রুতিবান অথচ অহংকারী : শুধু প্রতিশ্রুতি প্রদান নয়, লেখক মেসো তপনের লেখা গল্পটির কোন্টি বিশেষ সদর্থক দিক, সে বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন শ্বশুরবাড়িতে। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চান ছেলেমানুষ তপনের কাঁচা লেখাতেও বিষয়বস্তুগত জোর আছে। অথচ 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় প্রকাশিত 'প্রথম দিন' নামে মুদ্রিত গল্পটি তপনের লেখা নয়, 'কারেকশান'-এর নামে সেটা তার লেখক মেসো নিজস্ব দক্ষতায় নতুন করে লিখে দিয়েছেন। তপনের নতুন মেসোর এই আচরণ প্রমাণ করে তিনি একজন প্রতিশ্রুতিরক্ষাকারী ব্যক্তিত্ব হলেও লেখক পরিচয়ের অহংবোধে তিনি তপনের আবেগকে ছুঁতে পারেন না।

৪। "কিন্তু নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের।"-কীভাবে তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল? তার সত্যিকারের জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল কীভাবে?

বিশিষ্ট সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃত অংশে তপনের বাস্তববোধের উন্মেষকে ইঙ্গিত করা হয়।

প্রথম উন্মীলন : তপন শৈশব থেকেই সাহিত্য-অনুরাগী। গল্প পড়ার অভ্যাস থেকেই তপনের মনে লেখক সম্বন্ধে এক কাল্পনিক ধারণা তৈরি হয়েছিল। তার কল্পনায় লেখক ছিল ভিনগ্রহের মানুষ, আকাশ থেকে পড়া অদ্ভুত জীব। কিন্তু গ্রীষ্মের ছুটিতে ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে নতুন মেসোর সঙ্গে তার দেখা হয়, যিনি একজন লেখক। সেখানে মেসোকে বাবা-কাকাদের মতো স্বাভাবিকভাবেই প্রাত্যহিক কাজ যেমন-স্নান করতে, দাড়ি কামাতে, ঘুমোতে, কাগজের বিষয় নিয়ে তর্ক করতে দেখে লেখক সম্বন্ধে তপনের প্রাথমিক ধারণা বদলে যায়। এভাবে তার প্রথম জ্ঞানচক্ষুর উন্মেষ হয়।

তপনের লেখা 'প্রথম দিন' গল্পটি মাসির অনুরোধে কিছু 'কারেকশান' করে মেসো তার পরিচিত সম্পাদককে দিয়ে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকাতে ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পত্রিকাটিতে 'শ্রী তপনকুমার রায়'-গল্পলেখকের নাম-সহ সেই গল্প প্রকাশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িতে হইচই পড়ে গেলেও সকলে তপনের দক্ষতা নয়, মেসোর কৃতিত্বকেই গুরুত্ব দেয়।

প্রকৃত উন্মীলন : পরিবারের সকলের সমালোচনায় বিদ্ধ তপন মায়ের অনুরোধে গল্পপাঠ করতে গিয়ে দেখে গল্পের নাম আর লেখকের নাম ছাড়া তার নিজের লেখা গল্পের সবটাই নতুন মেসো পালটে দিয়েছেন। এই ঘটনার অভিঘাতে অপমানিত, লজ্জিত তপন প্রতিজ্ঞা করে গল্প ছাপাতে দিলে সে নিজেই যাবে, কারও করুণা-সহানুভূতির অপেক্ষা করবে না। এভাবেই তপনের নিমীলিত জ্ঞানচক্ষুর প্রকৃত উন্মীলন ঘটে।

৫। "রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।"- কোন্ ঘটনা প্রসঙ্গে কার মধ্যে এই প্রবাদবাক্যটি জেগে ওঠে? এক্ষেত্রে রত্ন কোন্টি এবং জহুরিই বা কে? বক্তার কেন মনে হয়েছিল জহুরি রত্নটিকে চিনে নিতে পারবে?

প্রসঙ্গ : আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের ছোটোমাসি তপনের লেখা গল্পের গুণগত মান নির্ধারণের জন্য যখন লেখক নতুন মেসোর কাছে গল্পটি নিয়ে যায়, তখন তপনের মনে এই প্রবাদবাক্যটি জেগে ওঠে।

এক্ষেত্রে 'রত্ন' বলতে তপনের লেখা গল্পকে বোঝানো হয়েছে। আর 'জহুরি' বলতে লেখক মেসোমশাইকে বোঝানো হয়েছে।

কারণ : তপনের ছোটোমেসো একজন প্রফেসার এবং একজন দক্ষ লেখক। তাই তিনি সাহিত্যবোধসম্পন্ন জ্ঞানী ব্যক্তি। সুতরাং তিনিই একটা গল্প বা লেখার প্রকৃত মূল্য বা তার গুণমান যথার্থভাবে বিচার করতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবে স্বল্প অভিজ্ঞতায় তপনেরও মনে হয়েছে 'রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।' অর্থাৎ জহুরি বা রত্ন বিশেষজ্ঞ যেমন রত্ন চেনেন এবং সহজেই আসল-নকল নির্বাচন করতে পারেন, তেমনি একজন লেখক তথা জ্ঞানী ব্যক্তি গল্পের মূল্যায়ন করতে পারেন।

৬। "বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা।"-চায়ের টেবিলে ওঠা কথাটি সম্পর্কে বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল? নতুন মেসোরই বা এই ঘটনায় বক্তব্য কী ছিল?

বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া : প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে বর্ণিত তপনের লেখা গল্পের প্রকৃত মূল্য বিচারের জন্য তার ছোটোমাসি গল্পটি নতুন মেসোর কাছে নিয়ে যায়। তখন মেসোমশাই গল্পটি সামান্য 'কারেকশান' করে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এই কথা বিকেলের চায়ের টেবিলে বাড়ির অন্য সদস্যরা জানতে পারলে, তারা তপনের গল্প শুনে হাসে।

লেখক ছোটোমেসোর বক্তব্যএই ঘটনায় তপনের নতুন মেসোর প্রতিক্রিয়া ছিল প্রায় বিপরীত। তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা যেখানে তপনের লেখা গল্প শুনে হাসাহাসি করেছে, সেখানে তিনি কিন্তু তপনকে গল্প লেখায় উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, তপনের বয়সি অন্য ছেলেরা যেখানে প্রথম গল্প লিখতে বসে, হয় রাজা-রানির গল্প লেখে নতুবা লেখে খুনজখম, অ্যাকসিডেন্টের গল্প অথবা লেখে অনাহারে মৃত্যুর কাহিনি-সেখানে তপন লিখেছে ওর ভরতির দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প, যা তপনের লেখার একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ এহ ঘটনায় ছোটোমেসোর প্রতিক্রিয়া ছিল সংবেদনশীল।

৭। "তপন কতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে।"—কী কারণে তপন দিন গুনছিল? তার দিন গোনার ফল কী হয়েছিল?

দিন গোনার কারণ : বাংলার অন্যতম বিশিষ্ট সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর লেখা 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটির প্রধান চরিত্র তপন অত্যন্ত সাহিত্যানুরাগী। সেই অনুরাগ থেকে সে গল্প লিখতে শুরু করে। বিশেষত, তার প্রিয় ছোটোমাসির সঙ্গে এক নামি লেখকের বিয়ে হওয়ায় সেই উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। এদিকে ছোটোমাসির তৎপরতায় গল্পটি নতুন মেসোর কাছে পৌঁছোয়। নতুন - মেসো তখন তপনের গল্পের বিষয় নির্বাচনের প্রশংসা করে জানান, - গল্পটি সামান্য কারেকশান করে তিনি সেটা 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। এই কারণে তিনি গল্পটি সঙ্গে করে নিয়ে চলে যান। তাই তপন তার গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়ার প্রতীক্ষায় আকুলভাবে দিন গুনছিল।

দিন গোনার ফল : তপনের অপেক্ষার ফল সুখকর হয়নি। লেখক নতুন মেসো তপনকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেও 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় তপনের নামে মুদ্রিত গল্পটি তপন মায়ের অনুরোধে সবার সামনে পাঠ করতে গিয়ে আবিষ্কার করে সামান্য কারেকশান নয়, মেসো সম্পূর্ণ গল্পটিই তার নিজস্ব দক্ষতায় লিখে দিয়েছেন। যা তপনের নিজের লেখা নয়, মেসোর করুণায় তা তার নামে প্রকাশিত হয়েছে দেখে লজ্জায় এবং আত্মাভিমানে তপন ব্যথিত হয়।

সকলের আড়ালে গিয়ে কেঁদে ফ্যালে সে। মনে মনে শপথ নেয় তার নিজের লেখা যদি কখনও কোনো পত্রিকায় ছাপানোর যোগ্য হয় তবে সে নিজে গিয়েই ছাপাতে দেবে, এ বিষয়ে তার তৃতীয় কোনো ব্যক্তির সহানুভূতির প্রয়োজন নেই।

৮। "সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ?"-তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন কোনটি? ওই সুখের দিনের শেষ পরিণতি কী হয়েছিল?

সবচেয়ে সুখের দিন : বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের সদ্যবিবাহিত ছোটোমাসি আর ছোটোমেসো যেদিন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার একটি সংখ্যা নিয়ে সবচেয়ে সুখের দিন তপনদের বাড়ি এসেছিল, সেদিনটি ছিল তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। কারণ তপন আশা করেছিল মেসোর নিয়ে আসা পত্রিকাটিতে সম্ভবত তার জীবনের প্রথম লেখা গল্পটি ছাপা হয়েছে। সেই উত্তেজনার আবেশে ওই দিনটি হয়ে উঠেছিল তার কাছে সর্বাপেক্ষা সুখের।

শেষ পরিণতি : তপনের ছোটোমাসি এবং নতুন মেসো 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা নিয়ে এলে তপনের মনে যে চূড়ান্ত সুখকর অনুভূতি তৈরি হয়েছিল, তার শেষ পরিণতি বালক তপনের কাছে হয়ে উঠেছিল অত্যন্ত করুণ। 'প্রথম দিন (গল্প), শ্রীতপন কুমার রায়'-এই শিরোনামে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি মায়ের আদেশে পাঠ করতে গিয়ে তপন দেখেছিল সম্পূর্ণ গল্পটি লেখক মেসো তাঁর নিজস্ব লিখন কৌশলে বদলে দিয়েছেন। একমাত্র শিরোনাম ছাড়া তাতে তপনের কোনো অস্তিত্বই নেই। এই ঘটনায় তপন অত্যন্ত আঘাত পেয়েছিল। অপমানে, লজ্জায় সকলের আড়ালে গিয়ে সে কেঁদে ফেলেছিল। এই গভীর দুঃখের মুহূর্তে সে সংকল্প নিয়েছিল- ভবিষ্যতে কখনোই কারোর সাহায্যে সে গল্প ছাপাতে দেবে না। নিজের অপটু লেখা প্রত্যাখ্যাত হলেও তপন কোনোভাবেই যা তার নিজের লেখা নয়, সেই গল্প ছাপার অপমানে অপমানিত হবে না।

৯। "পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?”- 'অলৌকিক' বিষয়টি কী তা ব্যাখ্যা করো। এক্ষেত্রে বক্তার আশাবাদ কীভাবে ধরা পড়েছে, তা স্পষ্ট করো।

অলৌকিক বিষয় : 'অলৌকিক' শব্দের অর্থ যা 'লৌকিক নয়' অর্থাৎ যা অবাস্তব বা অকল্পনীয়। আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে কিশোর তপনের লেখা প্রথম গল্প তার লেখক মেসো পত্রিকায় প্রকাশের উদ্দেশ্যে নিয়ে অলৌকিক বিষয় যান। দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও কোনো সংবাদ না এলে তপনের কিশোর মন আশাহত হয়ে পড়ে। এমনই একদিন সে যখন বিষণ্ণ মনে বসে আছে, 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা হাতে তাদের বাড়িতে আসে ছোটোমাসি এবং লেখক-মেসো। পত্রিকা দেখে 'বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের'। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসানে তার স্বপ্ন সফলের সম্ভাবনায় সে যেন যুক্তিগ্রাহ্য দৃষ্টিকোণে ব্যাপারটিকে বিশ্লেষণ করতে ভুলে যায়। তার কল্পনাপ্রবণ মন যেন দেখতে পায় তার লেখা সমেত পত্রিকাটি হাজার-হাজার পাঠকের হাতে ঘুরছে-সেই প্রসঙ্গেই প্রশ্নোদ্ভূত উদ্ধৃতিটির অবতারণা।

বক্তার আশাবাদ : 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি পরিপূর্ণভাবে এক বালকের স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের কাহিনি। এই গল্পে তপনের সদ্যবিবাহিত লেখক ছোটোমেসো তপনের লেখা গল্প পড়ে প্রশংসা করেন এবং জানান সামান্য 'কারেকশান' করে দিলে ওই গল্পটি পত্রিকায় পর্যন্ত ছাপানো যেতে পারে। এখান থেকেই শুরু হয় তপনের আশাবাদের প্রথম পর্ব। এইসময় ছোটোমাসির জোরালো দাবিতে রাজি হয়ে ছোটোমেসো প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি তপনের গল্পটি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। এই কথা শুনে আশাবাদে ডুবে যায় তপন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও গল্পটি প্রকাশিত না হওয়ায় তপন আশা ছেড়ে দেয়। চিত্তের এই বিষণ্ণ দশাতেই আশাবাদের উত্তরণ ঘটে। এমনই একদিন তপনের ছোটোমেসো 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকা হাতে তাদের বাড়িতে এলে তপন ভাবতে চেষ্টা করে তার মতো মানুষও লেখকের মর্যাদা পেতে পারে, তার লেখা গল্পও পারে ছাপার অক্ষরে হাজার হাজার পাঠকের হাতে ঘুরতে। অর্থাৎ তার লেখক হওয়ার স্বপ্ন আজ বাস্তব রূপ পেতে চলেছে সত্যিই। সেই মুহূর্তে স্বপ্নপূরণের আনন্দঘন আকাশে নিজেকে ভাসিয়ে দেয় সে। এভাবেই আশাবাদ ঝিলিক দেয় তার জীবনে।

১০। "তপন যেন কোথায় হারিয়ে যায় এইসব কথার মধ্যে।"- 'এইসব কথা' বলতে কোন্ সব কথার কথা বলা হয়েছে? তাতে তপনের হারিয়ে যাওয়ার কারণ কী?

বাড়ির লোকেদের সমালোচনা : আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে 'এইসব' কথা বলতে তপনের গল্প প্রথমবার 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর সেই গল্প প্রকাশকে কেন্দ্র করে বাড়িতে যেসব বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করা হয়েছিল, সেইসব কথাকে বোঝানো হয়েছে।

গল্প লেখার পরবর্তী পর্ব থেকেই ঘরের লোকেরা তপনকে নিয়ে নানা বিদ্রুপ করে। এরপর যখন মেসো সত্যিই ওই গল্পটি পত্রিকায় ছাপিয়ে তপনদের বাড়িতে উপস্থিত হন; লেখক মেসোর অনুমোদন ব্যতিরেকে যে তপনের এই সাফল্য অসম্ভব ছিল-এরূপ আলোচনায় তপনের বাবা, মেজোকাকু সেই আনন্দ-মুহূর্তকে অতিষ্ঠ করে তোলেন। বাবা বলেন-'তাই। তা নইলে ফট করে একটা লিখল, আর ছাপা হলো'। মেজোকাকু বলেন-'তা ওরকম একটি লেখক মেসো থাকা মন্দ নয়। আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম।' অন্যান্যরাও বলেন তপনের নতুন মেসোর মহত্ত্বের কথা। কেউই তপনের কৃতিত্বকে অভিনন্দন জানায় না। এইসব অপ্রত্যাশিত নেতিবাচক কথার ভিড়ে তপনের গল্প প্রকাশের আনন্দ হারিয়ে যায়। 'এইসব কথা' বলতে উদ্ধৃত অংশে তপনের আত্মীয়দের এই বিরূপ সমালোচনাকে বোঝানো হয়েছে।

হারিয়ে যাওয়ার কারণ : বাড়ির লোকের নিষ্ঠুর সমালোচনায় তপন নিদারুণ কষ্ট পায় এবং আশাহত হয়। এতক্ষণ যে উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং আশায় তার মন ভরে উঠেছিল; সকলের তাচ্ছিল্য আর বিদ্রুপে তা যেন কোথায় হারিয়ে যায়। গল্প ছাপা হওয়ার পর যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হওয়ার কথা, সেই আনন্দ ও আহ্লাদ যেন সে কোথাও খুঁজে পায় না। এক নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা তাকে আহত করে, তপন লজ্জিত হয়। আর এই লজ্জা ও অপমানেই তপন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ও গতি থেকে বিচ্যুত হয়ে হারিয়ে যায়।

১১। "তপন আর পড়তে পারে না। বোবার মতো বসে থাকে।"-তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো।

ভূমিকা : আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের লেখক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। তার কৈশোর মনের কল্পনাপ্রবণতায় সে মনে করত লেখক সাধারণ চেনা মানুষের মতো কেউ না, এমনকি আকাশ থেকে পড়া কোনো অদ্ভুত জীব। কিন্তু ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে নতুন মেসোর সঙ্গে আলাপে তপনের প্রথম বোধোদয় হয়।

কারণ : নতুন মেসোর সাহচর্যে তপনের গল্প লেখার স্বপ্ন দৃঢ় হয়। স্কুলে প্রথম ভরতির অভিজ্ঞতা নিয়ে তপন নতুন যে গল্প লেখে, ছোটোমাসির তৎপরতায় তা নতুন মেসোর কাছে পৌঁছোয় এবং মেসোর সৌজন্যে 'প্রথম দিন' শিরোনামে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সেই গল্প মায়ের নির্দেশে পড়তে গিয়ে তপন আত্মানুসন্ধানী দৃষ্টিতে উপলব্ধি করে তার লেখা গল্পটি 'কারেকশান' করার পরিবর্তে নতুন মেসো নিজস্ব দক্ষতায় সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছেন। যে গল্প তপনের নিজের লেখা নয়, সেই গল্প তার নিজের নামে প্রকাশিত হওয়ার যে অপমান, সেই অপমানে তপন স্তব্ধ হয়ে যায়। স্বপ্নপূরণের সমস্ত উত্তেজনা এই মানসিক আঘাতে বিস্বাদ হয়ে যায়। তাই বাব্রুদ্ধ তপন আর পড়তে পারে না।

১২। "তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।”- কোন্ দিন তপনের এমন মনে হয়েছিল? তার এমন মনে হওয়ার কারণ কী? (মাধ্যমিক, ২০২৩)

দিনটির স্বরূপ : প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্প থেকে গৃহীত অংশে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার যে সংখ্যায় তপনের 'প্রথম দিন' গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, সেই সংখ্যাটি নিয়ে যেদিন লেখক মেসো তপনের বাড়িতে এসেছিলেন, সেইদিনের কথাই বলা হয়েছে।

তপনের দুঃখ পাওয়ার কারণ : তপন অপ্রত্যাশিতভাবে তার সাহিত্যিক ছোটোমেসোর আনুকূল্য লাভ করে। মেসো প্রতিশ্রুতি দেন যে, তপনের লেখা গল্পটি সামান্য সংশোধন করে তিনি 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন। তপনের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসানে ছোটোমাসি আর ছোটোমেসো উপস্থিত হন তপনদের বাড়িতে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকার সেই সংখ্যা হাতে, যেখানে তপনের লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছে। বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় এই উপলক্ষ্যে। কিন্তু কেবল মেসোর করে দেওয়া গল্পের 'কারেকশান' ও তার মাহাত্ম্যের কথাই জোরালোভাবে চর্চিত হতে থাকে, যেন তপনের এক্ষেত্রে কোনো কৃতিত্বই নেই। বাড়ির আবহে তপনের আকাঙ্ক্ষিত আনন্দ বিস্বাদ হতে শুরু করে। এরপর নিজের লেখা মুদ্রিত গল্প মায়ের আদেশে পাঠ করতে গিয়ে প্রচণ্ড মানসিক ধাক্কা খায় তপন। সে দ্যাখে তার নামে মুদ্রিত গল্পটির সম্পূর্ণটাই বদলে দিয়েছেন মেসো। সেই গল্পে একমাত্র শিরোনামটি ছাড়া তপনের নিজস্বতা কিছু নেই। এই ঘটনায় তপন এতটাই স্তম্ভিত এবং মর্মাহত হয় যে, সে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফ্যালে এবং নীরবে লুকিয়ে চোখের জল ফ্যালে। দিনটিকে তাই তপনের সবচেয়ে দুঃখের দিন বলে মনে হয়।

১৩। "শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন"-মুহূর্তটি কেন দুঃখের? এই দুঃখবোধ থেকে বক্তা কী সংকল্প গ্রহণ করেছিল?

দুঃখের প্রকৃত কারণ : সুখ-দুঃখের আবর্তনে আবর্তিত যে মনুষ্য জীবন, তার দুঃখের নেপথ্যে নানা লৌকিক কারণ বর্তমান। আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের আবেগদীপ্ত চরিত্র তপনের জীবনেও ঘটে যাওয়া দুঃখময় অনুভূতির বিশেষ কারণ ছিল। প্রায় না চাইতেই পেয়ে যাওয়ার মতো তপনের লেখা জীবনের প্রথম গল্পটি 'প্রথম দিন' শিরোনামে 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় প্রকাশ করে দিয়েছিলেন তার সাহিত্যিক মেসো। এই ঘটনায় অপ্রত্যাশিত সুখের শিখরে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল তপনের। কিন্তু একদিকে নিজের বাড়িতেই তার লেখা নিয়ে বিদ্রুপ এবং অন্যদিকে 'কারেকশান'-এর নামে ছোটোমেসোর দ্বারা তপনের গল্পটির সামগ্রিক পরিবর্তন তপনের মনকে ভয়ানক আঘাত করেছিল। সে কারণেই ওই মুহূর্তটি তার কাছে হয়ে উঠেছিল দুঃখের।

দুঃখবোধ থেকে জাত সংকল্প : এই দুঃখবোধে তপন প্রথমে আবেগের বশে কান্নায় ভেঙে পড়লেও পরে সে তার মনকে শক্ত করে। সে গভীরভাবে সংকল্প করে যদি কখনও সে তার লেখা ছাপতে দেয়, তবে সেই লেখা সে নিজে গিয়ে পত্রিকার দপ্তরে জমা দেবে। কারো কোনো সাহায্য নেবে না। সেই অপটু লেখা যদি পত্রিকার সম্পাদকের দ্বারা বাতিলও হয়, তাহলেও তপন দুঃখিত হবে না। কারণ সেক্ষেত্রে তপনকে শুনতে হবে না অন্য কেউ তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে বড়ো কথা নিজের লেখা গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়তে হবে না তাকে।

আরো জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন : www.wblearn.in